Pramathesh Mukherjee Ex MP of Passes away
Pramathesh Mukherjee: বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ প্রয়াত হলেন
নিজস্ব সংবাদদাতা- বহরমপুর: বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ শ্রী প্রমথেশ মুখার্জী প্রয়াত হলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল 79 বছর। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছিলেন। চিকিৎসার জন্য তিনি কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন এবং গত সোমবার তার মৃত্যু হয়।
Pramathesh Mukherjee (প্রমথেশ মুখার্জি)র জন্ম ১৯৪৬ সালের ১৭ই জানুয়ারি একটি সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে। তাঁর পিতা সত্যব্রত মুখার্জি ছিলেন পাঁচথুপি টিএন ইনস্টিটিউশনের শিক্ষক এবং মা ছিলেন একজন গৃহবধূ। ১৯৬৮ সালে তিনি মুর্শিদাবাদের কান্দি রাজ কলেজ থেকে বিএসসি পাস করেন। বিএসসি পাস করার পর তিনি সুন্দরপুর হাইস্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি আবার পড়াশোনাও শুরু করেন এবং স্পেশাল বিএ পাস করেন। তারপরে বেলুড় কলেজ থেকে বিএড করেন।
পরবর্তীতে Pramathesh Mukherjee কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস করেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি আরএসপি ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি আর.এস.পি-দলের সংগঠক হিসাবে নিযুক্ত হয়েছিলেন। তারপরে তিনি বহরমপুরে চলে আসেন এবং খাগড়া গুরুদাস তারা সুন্দরী ইনস্টিটিউশনে ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। এখানে এসে তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএ পাস করেন। তারপরে তিনি দীর্ঘদিন গবেষণাতেও যুক্ত ছিলেন।
তাঁর রাজনৈতিক জীবন:
তিনি বহরমপুরের সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হন। ফেনী তিনি পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী সিদ্ধার্থ শংকর রায় কে হারিয়ে সাংসদ পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে তিনি তিন তিনবার জয়লাভ করেন। ১৯৯৪, ১৯৯৬ এবং ১৯৯৮ সালে তিনি আরএসপি দলের হয়ে লোকসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছিলেন। ১৯৯৪ সালে বহরমপুরের তৎকালীন সাংসদ স্বাধীনতা সংগ্রামী মাননীয় ননী ভট্টাচার্য প্রয়াত হন। ১৯৯৪ সালের ১২ই মার্চ বহরমপুর আসনে উপনির্বাচন হয়।
সেই উপনির্বাচনে কংগ্রেসের প্রতীকে দাঁড়িয়েছিলেন সিদ্ধান্ত শংকর রায়। তাঁকে হারিয়ে তিনি বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছিলেন। ১৯৯৮ সালে গুজরাল সরকারের পতন হলে ফের লোকসভা নির্বাচন হয়। ১৯৯৮ সালের দ্বাদশ সাধারণ নির্বাচনী তিনি নির্বাচিত হন সাংসদ হিসেবে। ১৯৯৯ সালে প্রমথেশ মুখার্জি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর কাছে হেরে যান। পরবর্তীতে ২০০৪ ও ২০০৯ সালের নির্বাচনে ভোটে লড়েছিলেন তিনি।
গত সোমবার কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তার মৃত্যুতে শোক জ্ঞাপন করেছেন সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্য, জেলা সম্পাদক মোঃ নওফেল শফিউল্লাহ সহ আরোও অনেকে। তিনি সব মহলেই ভীষণভাবে আদরণীয় ছিলেন, তাঁর রাজনৈতিক নিষ্ঠা ও ভদ্র ব্যবহারের জন্য। প্রাক্তন সাংসদের মৃত্যুতে আরএসপি সহ বাম, ডানের অনেক নেতৃত্ব থেকে শুরু করে জেলার নেতারাও সকলেই শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। মুর্শিদাবাদের বর্তমান তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ আবুল তাহের খান বহরমপুরের বিজেপি বিধায়ক সুব্রত মৈত্র ও অন্যান্য দলের নেতারাও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ ও জাতীয় কংগ্রেসের প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি এবং লোকসভার বিরোধী দলনেতা শ্রী অধীর রঞ্জন চৌধুরী শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি তাঁর আকস্মিক মৃত্যু সংবাদ শুনে তিনি অত্যন্ত ব্যথিত ও শোকাহত হন, এ কথা তিনি সোশ্যাল মিডিয়াতেও জানান। তিনি আরোও বলেন, উনার সাথে আমার রাজনৈতিক লড়াই ছিল, কিন্তু তিনি আমার কাছে শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তাঁর জ্ঞান, শিক্ষা, ভদ্রতা ও সংস্কৃতিবোধ আমার স্মরণে অমলিন হয়ে আছে। তাঁর আকস্মিক প্রয়াণে তিনি তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন।